

এমআইটি যাদুঘর (MIT Museum) Optiker প্রদর্শনী পাঠ্য
স্টিফেন বেন্টন (Stephen Benton) নিজেকে “optiker” – হিসেবে অভিহিত করেন, শব্দটি দ্বারা সেই ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যিনি আলো এবং দৃষ্টির সংযোগস্থল নিয়ে কাজ করেন। এই এমআইটি মিডিয়া ল্যাব (MIT Media Lab) এর প্রতিষ্ঠাতা অনুষদ সদস্য, স্থানিক প্রতিমূর্তি তৈরীর অগ্রনী কাজের জন্য সুপরিচিত ব্যক্তি, ১৯৪০-৫০ সালের দিকে ত্রীমাত্রিক চলচিত্রের প্রতি মুগ্ধতা নিয়ে বেড়ে ওঠেন। এমআইটি (MIT) তে স্নাতক চলাকালীন সময়ে, তার পরামর্শদাতা, সুপরিচিত আলোকচিত্রী এবং তড়িৎ প্রকৌশলী প্রফেসর হ্যারল্ড এজারটন (Harold Edgerton) তাকে Polaroid এর প্রতিষ্ঠাতা এডউইন ল্যান্ডের (Edwin Land) সাথে পরিচয় করিয়ে দেন, যিনি বেন্টনকে (Benton) গবেষণার জন্য একটি গবেষণাগার প্রদানের প্রস্তাব দেন।
১৯৬৫ সালে সেই বেন্টনই (Benton), জন (John) এবং মেরি ম্যাকক্যান (Mary McCann) এবং তার স্ত্রী জেনির (Jeannie) সাথে, তার প্রথম হলোগ্রাম তৈরি করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি নিজেই প্রথম সাদা আলোতে চলমান অথবা "রংধনু" হলোগ্রাম তৈরী করে হলোগ্রাফিতে যুগান্তকারী অবদান রাখেন। এটি আবিস্কারের পূর্বে, বেশির ভাগ হলোগ্রামকে দেখার জন্য লেজার-এর প্রয়োজন হতো। তবে বেন্টনের (Benton) হলোগ্রাম একটি আলোক বাতি অথবা সূর্যের মতো সহজে উপলব্ধ আলোতে দেখা যেত।
তাঁর আবিষ্কার এই ক্ষেত্রটিতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল, যা বৈজ্ঞানিক ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রতিমূর্তি নির্মাণের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল এবং শিল্পীদের অন্বেষণের একটি নতুন মাধ্যম স্থাপন করেছিল। পরবর্তী দশকে, বেন্টন (Benton) তার পদ্ধতিকে আরও তীক্ষ্ণ করে, হলোগ্রাফির প্রযুক্তিগত এবং শৈল্পিক গন্ডিকে পেরিয়ে যান আর তার প্রত্যেক অনুসন্ধানের সাথে আসে নতুন নতুন সৃষ্টিকর্ম।
বেন্টনের (Benton) জন্য হলোগ্রাম ছিল একই সাথে চেনা ও অচেনা। হলোগ্রামের সামনে দাঁড়ালে বাস্তবেই কিছু “দেখার” অনুভূতি হয়। কিন্তু আসলে, হলোগ্রামে কোনো চিত্র থাকে না এটি শুধুমাত্র মাইক্রোস্কেল কাঠামো যা আলোক তরঙ্গের সহায়তায় কাজ করে। হলোগ্রামের দৃশ্যটি ততক্ষণ পর্যন্ত অস্তিত্বশীল হয় না যতক্ষণ না পর্যন্ত আলোক তরঙ্গ আমাদের চোখের সাথে মিলিত হয়। আমাদের মস্তিষ্কের উজ্জ্বলতা, রঙের পরিসর এবং স্থানিক গভীরতা থেকে দৃশ্যটি তৈরী করে।
এখানে প্রদর্শিত হলোগ্রামগুলো হলো বেন্টনের (Benton) পরীক্ষামূলক যাত্রার বিরতি বিন্দুসমূহ। যখন আপনি এই "রংধনু" হলোগ্রামগুলোর দিকে তাকান, তখন এক মুহূর্তের জন্য মস্তিষ্ক আর আলোর সৃজনশীল মিথস্ক্রিয়া অনুভব করে দেখুন। বেন্টন (Benton) এটিতে খুশি হতেন।
এমআইটি যাদুঘরে (MIT Museum) বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপক এবং সবথেকে বৃহত্তম হলোগ্রামের সংগ্রহ রয়েছে। ২০২৩ সালে, বেন্টনের (Benton) পরিবার তার নিজস্ব বিস্ময়কর সংগ্রহ দান করেছে। এই সংগ্রহে মিডিয়া ল্যাবে তার দুই দশকের গবেষণা ও শিক্ষাদান নথিভুক্ত রয়েছে এবং তার ব্যক্তিগত সংগ্রহের হলোগ্রামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা তুলে ধরে তার নিজস্ব কাজ এবং আরও অনেক শিল্পী, ছাত্র এবং গবেষকদের কাজ যাদের সাথে তিনি তার কর্মজীবনে যুক্ত ছিলেন।